নদীঘেরা অপরুপ রাজাপাহাড়

প্রকাশঃ আগস্ট ২৫, ২০১৫ সময়ঃ ৩:১৮ অপরাহ্ণ.. সর্বশেষ সম্পাদনাঃ ৫:২৪ অপরাহ্ণ

ফারজানা ওয়াহিদ

rajar pahar2

গারো পাহাড়ের সৌন্দর্যের এক অপরূপ লীলাভূমি রাজা পাহাড়। তবে এ পাহাড়ের সৌন্দর্য এখন আর আগের মতো নেই। তবে এর বৈশিষ্ট্য আশেপাশের পাহাড়গুলোর তুলনায় ব্যতিক্রম। গারো পাহাড়ে যতগুলো উঁচু টিলাভূমি রয়েছে,  তার মধ্যে রাজার পাহাড়ের উচ্চতা সবচেয়ে বেশি। এর চূড়ায় রয়েছে শতাধিক হেক্টর জমির সমতল বিরাণভূমি। সবুজ আর নীলের সংমিশ্রণে মাথা উঁচিয়ে দাঁড়িয়ে  আছে এই পাহাড়।প্রাচীনকালে সম্ভ্রান্ত রাজ বংশের এক রাজার অবস্থানের ফলে এখানকার এই পাহাড়ের নাম হয় ‘রাজার পাহাড়’।

এ পাহাড়ের অন্যতম বৈশিষ্ট্য এটা নদীঘেরা। শেরপুরের শ্রীবরদী উপজেলার সীমান্তবর্তী ভারতের মেঘালয়ের পাদদেশে অবারিত সবুজের সমারোহ নিয়ে এ গারো পাহাড়ের অবস্থান। ছোট-বড় অসংখ্য টিলাভূমি আর সবুজে ঘেরা এ গারো পাহাড় কত যে মনোমুগ্ধকর তা নিজের চোখে না দেখলে অনুভব করার নয়।

এই পাহাড়ে প্রতিদিন শতশত মানুষের ভিড়ে জায়গাটি হয়ে ওঠে কোলাহলপূর্ণ। নারী,পুরুষ ও শিশুসহ বিভিন্ন বয়সের মানুষের পদভারে হয়ে ওঠে মুখরিত। এ পাহাড় পর্যটন কেন্দ্র হলে ভ্রমণপিপাসুদের চাহিদা পূরণে যোগ হবে নতুন মাত্রা। দেশের পর্যটন শিল্পের উন্নয়নে এখান থেকে আয় হবে বছরে লাখ লাখ টাকা।

এ রাজার পাহাড়ের পাশে আদিবাসী গ্রামগুলোর অনেক বেকার ও হতদরিদ্রদের জন্যে হবে কর্মসংস্থান।দেশী বিদেশী পর্যটকদের পদভারে আরও মুখরিত হয়ে ওঠবে এ পাহাড়।

শেরপুরের শ্রীবরদী পৌর শহর থেকে মাত্র ১৪ কিলোমিটার দূরে কর্ণঝোরা বাজার সংলগ্ন এ রাজার পাহাড়। এটি মানুষের জন্য বিনোদন স্পটে পরিচিত হয়েছে।
বছরে প্রায় সব সময়ই শতশত মানুষ শহর থেকে এ রাজার পাহাড়ের নির্মল পরিবেশে বেড়াতে আসে।

রাজার পাহাড়ের পাশের জনপদ বাবেলাকোনা। এটি যেন অসংখ্য উঁচু টিলায় ঘেরা অনবদ্য গ্রাম। প্রাচীনকাল থেকে এখানে গড়ে উঠেছে জনবসতি। ঝোঁপ-জঙ্গলে আবৃত গ্রামটি কালের আবর্তনে পরিচিত।

১৯৮০ সালে পাগলা দারোগা নামে জনৈক ব্যক্তি এ রাজার পাহাড়ের চূড়ায় গিয়ে বসবাস শুরু করেন। তিনি মারা গেলে এখনও তার ছেলে-মেয়েরা এখানে রয়েছে। তার ছেলেমেয়েরা এ টিলার এক কোনায় গড়ে তোলেন কাঁঠাল, লিচু ও কলার বাগান। অপূর্ব সৌন্দর্যময় এ রাজার পাহাড়ের চারদিকে আছে হরেকরকম প্রজাতির গাছ-গাছালি।

রাজার পাহাড়ের পাশেই বাবেলাকোনায় গারো, হাজং, কোচ অধ্যুষিত আদিবাসীদের সংস্কৃতির ভিন্নমাত্রায় রয়েছে বৈচিত্র্যপূর্ণ জীবনধারা। এখানের প্রাকৃতিক বিরূপতা জঙ্গল আর জন্তু জানোয়ারের মিতালীতে এ জনপদের চলমান জীবন সংগ্রামের বিরল দৃশ্য। আদিবাসীদের সংস্কৃতি, সংরক্ষণ ও চর্চার কেন্দ্র হিসেবে রয়েছে বাবেলাকেনা কালচারাল একাডেমি, যাদুঘর, লাইব্রেরী, গবেষণা বিভাগও মিলনায়তনের নিদর্শন। এখান থেকে আদিবাসীদের সম্পর্কে জানা যায় অনেক কিছুই।রাজার পাহাড়ের এই দৃশ্য দেখতে এসে আদিবাসীদের জীবনযাত্রার নানাদিক জানতে আগ্রহী হয়ে ওঠেন অনেকেই।

রাজার পাহাড় এর নিচ দিয়ে কয়েকটি ঝরণা বয়ে গেছে ঢেউফা নদীতে। টিলা থেকে নিচের দিকে তাকালে চোখ ফেরানো কঠিন হয়ে পড়ে। এমনি এ পাহাড়ের চূড়ায় দাঁড়িয়ে দেখা যায় আশপাশের কর্ণঝোড়া, মালাকোচা, দিঘলাকোনা, হারিয়াকোনা, চান্দাপাড়া, বাবেলাকোনাসহ ভারতের সীমান্ত এলাকা।

 

 

প্রতিক্ষন/এডমি/এফজে

আরো সংবাদঃ

মন্তব্য করুনঃ

পাঠকের মন্তব্য



আর্কাইভ

April 2024
S S M T W T F
 12345
6789101112
13141516171819
20212223242526
27282930  
20G